ঢাকাসোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

শিল্পীদের নামে মামলার হিড়িক, মুখ খুললেন মিশা সওদাগর

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১২ মে ২০২৫ , ০২:৪১ পিএম


loading/img
ছবি: কোলাজ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। জনরোষের ভয়ে ওই দিনই গণভবন ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই দলটির অনেক নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে নানা মামলা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ও অভিনেত্রীরাও।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এরকম তিনটি মামলায় ২৭ জন অভিনেতা ও অভিনেত্রীকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্তর্ভুক্ত শিল্পীরা সরাসরি অপরাধে জড়িত না থাকলেও তারা আওয়ামী লীগের সমর্থক ও অর্থের জোগানদাতা বলে মনে করা হচ্ছে। সেজন্য তাদের আসামি করা হয়েছে। যদিও আইনজীবীরা বলছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও ডকুমেন্টস ছাড়া কারও বিরুদ্ধে মামলা হলে সেটি আইনের অপব্যবহার হবে। এটি সমাজে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর ভাটারা থানাধীন এনামুল হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৭ শিল্পীকে আসামি করা হয়। ২০ এপ্রিল অভিনেতা ইরেশ জাকেরকে মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যা মামলায় ১৫৭ নাম্বার এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। ৩০ এপ্রিল ১৪ জন শিল্পীর বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করা সাইফুদ্দিন মো. এমদাদ হত্যাচেষ্টা মামলাকে আদালত আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, গত বছরের ৫ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে অভিনেত্রী শমী কায়সারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন উত্তরা পূর্ব থানার ইশতিয়াক মাহমুদ হত্যাচেষ্টা মামলার সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। পরের দিন তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। পরে আরও কয়েকটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

গত মাসের ২৯ তারিখে অভিনেতা সিদ্দিককে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে মারধর করে পুলিশে ধরিয়ে দেয় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরের দিন গুলশান থানার ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদার হত্যাচেষ্টার মামলার সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। 

শিল্পীদের নামে এমন গণহারে মামলায় বেশ উদ্বিগ্ন শিল্পী সমাজ। অনেকেই এইসব মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শিল্পীদের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারও বেশ বিব্রত।

বিজ্ঞাপন

c3d2cc05ecbb96a0bda839e7d1078bfb2bb3f2b366d4dc60_20250510_191743804

বিজ্ঞাপন

এদিকে শিল্পীদের নামে এমন গণহারে প্রসঙ্গে ঢাকাই চলচ্চিত্রের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, আপনারা ভালো করেই জানেন আমি ওইভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। কারণ রাজনীতি করতে অনেক যোগ্যতা লাগে, যেটি আমার নেই। তবে হ্যাঁ একসময় আমি জাজাসে ছিলাম কিন্তু পরে সময় দিতে পারব না বলে সরে দাঁড়িয়েছি। এরপর সেভাবে আর কখনোই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে মামলার বিষয়টি নিয়ে আমি সাধারণ মানুষ হিসেবে বলতে চাই যে অন্যায় করবে অবশ্যই তাকে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হউক, তবে হ্যাঁ কোনো নিরপরাধ মানুষ যেনো হয়রানির শিকার না হয়। 

এরআগে শিল্পীদের নামে মামলা দেয়া প্রসঙ্গে  মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী এবং অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম দেশের একটি গণমাধ্যমে বলেন, ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!

ঢালাওভাবে মামলায় শিল্পীদের সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে মনে করছেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, হত্যা মামলার আসামি বলে যেভাবে প্রচার করা হচ্ছে, তাতে হঠাৎ করে মনে হবে, শিল্পীরা বুঝি মানুষ মেরে ফেলেছে! এখন দেখছি আবার অর্থের জোগানদাতাও বলা হচ্ছে। আরে, এই শিল্পীদের কার কী অর্থ আছে, তা আমাদের ভালো করেই জানা আছে। কোথায় অর্থের জোগান দেবে, তা–ও আমাদের জানা আছে। কার কী সামর্থ্য, আমাদের জানা আছে না? শিল্পীরা এত টাকা কোথায় পাবে যে টু কিল পিপল। এটা কী ধরনের অবান্তর কথা! এটার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রেরও শক্ত অবস্থান নেওয়া উচিত। রাষ্ট্রের জানিয়ে দেওয়া উচিত, এসব মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে উল্টো তারা কঠিন শাস্তি পাবে।

আরটিভি/এএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |